আজ শুক্রবার, ২১শে আষাঢ়, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৫ই জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

জেএসসি পরিক্ষার্থী প্রিয়াংকা হত্যাকান্ড রূপগঞ্জে সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে মহাসড়ক অবরোধ, মানববন্ধন বিক্ষোভ


তুহিন মোল্লা, রূপগঞ্জ প্রতিনিধি :জেএসসি পরীক্ষার্থী প্রিয়াংকা হত্যারীদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসী ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক অবরোধ করেছেন। সময় তারা মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেছেন। ঘন্টাব্যপী সড়ক অবরোধের ফলে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে ১০ কিলোমিটার দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। এতে ভোগান্তির শিকার হয়েছেন যাত্রীসাধারন। শনিবার (১৮ নভেম্বর) দুপুরে উপজেলার তারাবো পৌরসভার কার্যালয়ের সামনে সড়ক অবরোধ, মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল কর্মসুচী পালন করা হয়।
মানববন্ধনের অংশগ্রহন করেন, আয়েত আলী ভুইয়া উচ্চ বিদ্যালয় ও হাজ্বী এখলাছ উদ্দিন ভুইয়া স্কুল এন্ড কলেজের শিক্ষক, শিক্ষার্থীসহ এলাকাবাসী। মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন, আয়েত ভুইয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক প্রধান শিক্ষিকা হোসেনেআরা পারভীন, সহকারী শিক্ষিক কৃঞ্চপদ সাহা, ক্রিয়া শিক্ষক লুৎফর রহমান, রামকৃঞ্চন বাবু, টিপু মোল্লা, আবু হানিফ, তাইজুদ্দিন, শহিদুল ইসলাম, আকতারুজ্জামান, স্কুল কমিটির সদস্য কবির মোল্লা, রিয়াজুল ইসলাম, জাহাঙ্গীর, খোকা প্রমূখ।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, প্রিয়াংকা একজন ভালো ছাত্রী ছিলো। সকল শিক্ষার্থীদের সঙ্গে প্রিয়াংকা লেখা-পড়ার পাশাপাশি খেলাধুলায়ও ব্যস্ত সময় পার করতো। নরপিচাশের মতো যারা এ ধরনের হত্যাকান্ড ঘটিয়েছে, তাদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি জানাই। এছাড়া বাড়ির মালিক ফারজানা বেগমকেও অবিলম্বে গ্রেপ্তার করতে হবে। এলাকাবাসী অভিযোগ করে জানিয়েছেন, হাসান, শহিদুল্লাহসহ তাদের লোকজন এলাকায় হত্যা, অপহরণ, ধর্ষণ, অস্ত্র, নারি নির্যাত, মাদকসহ বিভিন্ন ধরনের অপরাধ মুলক কর্মকান্ড করে আসছে। তাদের ভয়ে এলাকার কেউ টু-শব্দটিও করতে পারেনা। এদের বিরুদ্ধে রূপগঞ্জসহ বিভিন্ন থানায় ডজন খানেক মামলা রয়েছে।
বাবা মহিউদ্দিন, মা নাছিমা, বোন আমেনাসহ পরিবারের সদস্যদের দাবি, যারা প্রিয়াংকাকে নির্মম ভাবে হত্যা করেছে, তাদের অবিলম্বে ফাঁসি দিতে হবে। তাহলেই প্রিয়াংকার আতœা শান্তি পাবে।
এদিকে, পরে রূপগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইসমাইল হোসেনের নেতৃত্বে একদল পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে অবরোধকারীদের প্রিয়াংকা হত্যাকারীদের সর্বোচ্চ শাস্তির ব্যবস্থা করবেন বলে আশস্থ্য করলে অবরোধ তুলে নেয় তারা। নিহত প্রিয়াংকা উপজেলার বরাব এলাকার ওষুধ ব্যবসায়ী মহিউদ্দিনের মেয়ে। প্রিয়াংকা স্থানীয় হাজী আয়েত আলী ভুইয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের ৮ম শ্রেণির শিক্ষার্থী। মহিউদ্দিন পরিবার নিয়ে বরাব এলাকার ফারজানা বেগমের বাড়িতে বসবাস করতেন।
ওসি জানান, প্রাইভেট পড়ে আসার পথে জেএসসি পরিক্ষার্থী প্রিয়াংকাকে অপহরণ করে ধর্ষণের পর জবাই করে হত্যা করেছে বলে আদালতে স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দি দিয়েছেন গ্রেফতারকৃত হাসান। অন্য একটি স্থানে ধর্ষণের পর হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটিয়ে হত্যাকান্ডটি ভিন্নখাতে প্রভাবিত করার উদ্দেশ্যে বরাব কবরস্থান এলাকার দুই বাড়ির সীমানা প্রাচীরের পানির ড্রেনে লাশ ফেলে রাখা হয়।এ হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটিয়েছে ৪ জন। ৪ জনের মধ্যে শহিদুল্লাহ ডাকাত, হাসান ও উদরুতউল্লাহকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। সুজন নামে আরো এক জন পলাতক রয়েছে। গ্রেপ্তারকৃত শহিদুল্লাহ ডাকাত ও হাসানের বাড়ি বরাব এলাকায় এবং উদরুতউল্লাহ’র বাড়ি খাদুন এলাকায়। এর আগে, প্রিয়াংকার পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিত্বে মাসুম মিয়া নামে এক যুবককে গ্রেফতার করা হয়। মাসুম মিয়া এ হত্যাকান্ডের সঙ্গে জড়িত আছে কি না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, গত ৫ নভেম্বর সকালে বরাব কবরস্থান এলাকার দুই বাড়ির সীমানা প্রাচীরের পানির ড্রেনে জেএসসি পরিক্ষার্থী প্রিয়াংকার জবাই করা লাশ পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয়রা পুলিশে খবর দেন। পরে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য নারায়ণগঞ্জ সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। এ ঘটনায় প্রিয়াংকার বাবা মহিউদ্দিন বাদী হয়ে রূপগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

স্পন্সরেড আর্টিকেলঃ